চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যাবহার করার উপায়
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার এর অনেকগুলো বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন রয়েছে। স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে আমাদেরকে নিয়মিত কারি পাতা ব্যবহার করতে হবে। অনেক অনেক যুগ আগে থেকে চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার হয়ে আসছে।
এই পাতাটি হলো একটি ভিটামিনের উৎস। যুগের পরে যুগ ধরে চুলের পুষ্টি জোগাতে চুল বৃদ্ধি করতে বা চুল পড়া কমাতে ব্যবহার হয়ে আসছে চুলের যত্নে কারি পাতা। নিচে আর্টিকেলটি পড়লে বুঝতে পারবেন। কিভাবে আপনি চুলের কারি পাতা ব্যবহার করবেন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যাবহার করার উপায়
- চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যাবহার
- আমলকি ও মেথির সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার
- পিয়াজের সঙ্গে চুলের যত্নে কারি পাতা
- টক দইয়ের সাথে কারি পাতা ব্যবহার
- নারকেলের তেলের সঙ্গে চুলে কারি পাতা ব্যবহার
- চুলের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করলে যে যে উপকার গুলো পাওয়া যায়
- চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার
- লেখকের শেষ কথাঃ চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার ভালো একটি প্রাকৃতিক কার্যকরী পদ্ধতির ভিতরে। চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার বরাবরে অনেক কদর রয়েছে। কারি পাতার ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ গুণ। যেগুলোর কারণে চুল ভালো থাকে এবং চুল থাকে শক্ত। কারি পাতা প্রথমত বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যায়।
চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি কারি পাতার হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারবেন। আপনি যদি কারি পাতার হেয়ার প্যাক প্রতিদিন চুলে ব্যবহার করেন। তাহলে আপনি চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। চুল পড়া কমাতে কারি পাতার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উপকরণ।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় ৮টি উপায়
কারি পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি। এই ভিটামিন অকালে চুল পড়া রোধ করে এবং চুলকে গড়ে তোলে স্বাস্থ্যোজ্জল, ঘন এবং ঝলমলে। তাছাড়াও কারি পাতার মধ্যে যে ভিটামিন রয়েছে সেটি ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাই। এতে চুলের গোড়া থাকে শক্ত এবং চুল থাকে মজবুত এবং উজ্জ্বল। তাই চুলের যত্নের জন্য কারি পাতা ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের অনেক মতামত দিয়েছেন।
আমলকি ও মেথির সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার
আমলকি ও মেথির সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার করা যায়। আমলকি এবং মেথি চুল বাড়াতে বা চুল ঘনত্ব করতে সাহায্য করে। আপনি বা আমি যদি আমলকি ও মেথির সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার করতে যায়। তাহলে আমাদেরকে আধা কাপ কারি পাতা, একটি গোটা আম লোকির রস এবং আধা কাপ মেথি দিয়ে। ভালো করে মিক্স করে ব্যালেন্ডারে বা আপনার কাছে যেটা রয়েছে।
সেটি দিয়ে ঘুরিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। কারি পাতা আমলকী ও মেথির মিশ্রণটি তৈরি করার পরে আপনি আপনার মাথায় সে মিশ্রণটি ব্যবহার করবেন। মিশ্রণটি ব্যবহার করার পরে ৩০ মিনিট রেখে দিবেন। এবং আধা ঘন্টা পরে সেটি উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। কারণ কারি পাতার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি।
যেটা আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারী। এই ভিটামিন টুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। আর আপনি যদি চান যে আপনি এটি তেল হিসেবে ব্যবহার করবেন। তাহলে আপনি নারিকেলের তেলের সঙ্গে মেথি এবং কারি পাতা একসঙ্গে ফুটিয়ে নেবেন।
ফুটিয়ে নেওয়ার পরে এটি একটি তেল বানিয়ে রেখে দিবেন। এবং শ্যাম্পু করার আগে এই তেলটা আপনি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আপনার চুল অনেক স্বাস্থ্যােজ্জ্বল হবে এবং চুল সুন্দর থাকবে। আমলকি এবং মেথি চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
পিয়াজের সঙ্গে চুলের যত্নে কারি পাতা
পেঁয়াজের সঙ্গে চুলের যত্ন কারে পাতা ব্যবহারের অনেক উপকার রয়েছে। চুল পড়া বন্ধ করার জন্য পেঁয়াজ এবং কারি পাতা মিশ্রণ করে যদি ব্যবহার করা যায়। তাহলে অনেক উপকার আসবে। এই মিশ্রণটি বা এই পেস্ট বা উপকরণ টি চুল পাকা কমাতেও সাহায্য করে। ২০ থেকে ২৫ টি কারি পাতা একটি ব্যালেন্ডারে এ ঘুরিয়ে ভালো করে পেস্ট বানিয়ে নিন।
তারপরে সেই পেস্টের ভেতরে দিয়ে দিবেন একটি গোটা পেঁয়াজের রস। পেঁয়াজের রসটি কিছুক্ষণ আগেই করে রাখবেন। তারপরে দুটো একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে আপনার মাথায় মেখে নিন। তারপর এক থেকে দেড় ঘন্টা পরে আপনি আপনার মাথার সেই কারি পাতা এবং পেঁয়াজের যে পেস্ট বা উপকরণ লাগিয়েছেন।
সেটি শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে এবং চুল থাকবে উজ্জ্বল। কারণ চুল পড়া কমাতে পেঁয়াজ এবং কারি পাতার এটি একটি কার্যকরী প্যাক। আপনি এই কারি পাতা এবং পেঁয়াজের রস তুলার সঙ্গে মিশিয়ে চুলের গোড়াতে লাগান।
তাহলে আপনার চুল অনেক ভালো থাকবে এবং সুস্থ থাকবে। পেঁয়াজ ও কারি পাতা চুল বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে। কারণ এটার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন। আর মনে রাখবেন যে, এই উপকরণ টি ব্যবহার করার পরে। যদি আপনি শ্যাম্পু দিয়ে চুল না পরিষ্কার করেন।
তাহলে আপনার চুল থেকে পেঁয়াজের গন্ধ বের হতে পারে। যেটা খুব অসহ্য জনক একটি গন্ধ। তাই আপনি পেঁয়াজ এবং কারি পাতা ব্যবহার করার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে মাথাটি ধুয়ে নেবেন। তাহলে আপনার চুল পড়ার কমে যাবে এবং চুল ভালো থাকবে।
টক দইয়ের সাথে কারি পাতা ব্যবহার
টক দইয়ের সাথে কারি পাতা ব্যবহার করার অনেক উপকার রয়েছে। চুলের যত্নে কারো কথা ব্যবহার করাই টক দইয়ের সঙ্গে যদি কারি পাতা ব্যবহার করা যায়। তাহলে চুলের অর্থাৎ মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে। এবং খুশকি দূর করে। আরো একটি উপকার রয়েছে সেটি হল মৃত কোষ দূর করে দেয়।
আপনি যদি টক দইয়ের সাথে কারি পাতার এই সুন্দর কার্যকরী উপকরণ টি কাজে লাগাতে চান। তাহলে আপনাকে শুরুতেই একমুঠো কারি পাতা ব্যালেন্ডারে এ নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে একটি বা এক ধরনের বেস্ট বা উপকরণ তৈরি করে নিন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে অনলাইনে গেম খেলে টাকা ইনকাম করার উপায়
এবং আপনার কিনে আনা যে খাঁটি বা ভালো আগে থেকেই ফেটিয়ে রাখা টক দই রয়েছে। সেটার সঙ্গে এক টেবিল চামচ পরিমাণ কারি পাতা মিশ্রণ করে নেন বা মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখতে হবে যে যেন দুটোর পরিমাণ একই সমান হয়। এবং আপনি মাথার ত্বকের সাথে অর্থাৎ চুলের গোড়াতে গোড়াতে ভালো করে এই পেস্ট বা উপকরণ টি মেখে নিন।
তারপরে আধা ঘন্টা রেখে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এই উপকরণ টা ব্যবহার করার ফলে। আপনার মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকবে চুল হবে। খুশকি মুক্ত এবং যে মৃত কোষগুলো রয়েছে আপনার মাথায় সেগুলো দূর হয়ে যাবে।
এই কারি পাতাটি আপনি যদি চান তাহলে শুধুমাত্র গোড়া তে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়াও আপনি চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। তাহলে আপনার আরো উপকার হবে। আপনার চুল পড়া কমে যাবে। চুল বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং ঘনত্ব বাড়বে।
নারকেলের তেলের সঙ্গে চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার
নারিকেলের তেলের সাথে কারি পাতা ব্যবহার করার অনেক লাভজনক উপকার রয়েছে। এবং এই নারিকেলের তেলের সঙ্গে যদি কারি পাতা ব্যবহার করেন। তাহলে আপনার চুল অনেক নিরাপদ থাকবে। চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য আপনার নারিকেলের তেল ও কারি পাতা অত্যন্ত কার্যকরী দুটি উপাদান রয়েছে। যেটা ব্যবহার করাতে পারেন।
নারিকেলের তেল এবং কারি পাতা একসাথে ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়। এবং নতুন নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। নারিকেলের তেলে রয়েছে লৌহ, সেলেনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। যা চুলের শিকড় কে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে এবং চুলকে করে তোলে মজবুত এবং শক্তিশালী। এছাড়াও নারকেলের তেলের সঙ্গে যদি কারি পাতা ব্যবহার করা হয়।
তাহলে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে চুল ও বৃদ্ধি পায়। নারিকেলের তেলে থাকা এন্টি ফাঙ্গাল রয়েছে যেটা মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এবং চুলের শিকড় কে সুস্থ রাখতে সহযোগিতা করে। এর ফলে চুল পড়া অনেকটাই কমে যায়। নারিকেলের তেলের সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার করলে চুল পাকা কমে যায়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে অনলাইন ইনকাম বিকাশ পেমেন্ট 100%
চুল পাকা রোদ হয়ে যায় এবং চুল কালো হয়ে যায়। চুলের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করার ফলে বা নারিকেলের তেলের সঙ্গে কারি পাতা ব্যবহার করার ফলে। চুলের ন্যাচারাল কালার দীর্ঘস্থায়ী হয়। যেটা আপনার জন্য খুবই উপকারী। এটি একটি কার্যকরী বিষয়। তাই চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করুন এবং চুলকে করে তুলুন সুন্দর এবং লাবণ্যময়।
একটি কড়াই বা একটি প্যান গরম করে। নারকেলের তেল দিন এবং এক মুঠো কারি পাতা ফেলে হালকা গরমে কিছুক্ষণ গরম করুন। এরপর নামিয়ে ঠান্ডা করার পরে। এটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন। তাহলে চুল ভালো থাকবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।
চুলের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করলে যে যে উপকার গুলো পাওয়া যায়
চুলের জন্য কারি পাতা ব্যবহার করলে যে যে উপকার গুলো পাওয়া যায়। সেই উপকার গুলো আমরা আজকে বর্ণনা করবো। চুলে কারি পাতা ব্যবহার করলে অনেক উপকার হয়েছে। সেগুলো কিভাবে কোন উপায়ে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে। সেইগুলো ওপরে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই উপরের বর্ণনা অনুযায়ী চুলের যত্ন যদি কারি পাতা ব্যবহার করা হয়। তাহলে আমাদের নিম্নোক্ত উপকার গুলো হবে:
- চুলের আদ্রতা বজায় রাখে
- চুল পড়া কমায়
- চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
- চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- চুলের ন্যাচারাল কালার ধরে রাখে
- স্ক্যাল্পের স্ক্রিন পরিষ্কার করে
- মাথার রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
- চুল ঝলমলে করে
- চুলের খুশকি দূর করে
- চুলের আগা ফাটা কমায়
- চুল পাকা রোধ করে
এগুলো বাদে ও আরো অনেক রকমের উপকার রয়েছে এই চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার করে।
চুল পাকা রোধ করতে কারি পাতা
চুল পাকা রোধ করতে কারি পাতার অনেক উপকরণ রয়েছে। আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে। যারা এই সমস্যাতে ভুগি। যেমন সব থেকে বেশি যেটা, সেটা হলো অল্প বয়সে আমাদের অনেকের চুল পেকে যায়।
তাই আমরা বয়স থাকতে চুলে কারি পাতা ব্যবহার করা শুরু করব। এতে করে আমাদের চুল পাকা রোধ হবে। সাথে যদি পারে তাহলে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলে ভালোভাবে মেখে নিতে হবে। তাহলে স্কুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকার পাশাপাশি চুল পড়াও কমে যাবে এবং চুল পাকাও কমে যাবে।
লেখকের শেষ কথাঃ চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার
চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কারি পাতা যে যে কাজে লাগে সেগুলো আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। কারি পাতা আসলে একটি গুণসম্পন্ন উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে। যা আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী। এই কারি পাতা আমাদের চুলের অনেক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করা। তবে এটি ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধি না করে এই কারি পাতাটি পরিমাণ মতো ব্যবহার করা উচিত হবে। আমাদের একদিন পরপর ব্যবহার করলে সব থেকে ভালো হয়।
সম্মানিত পাঠক, আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হন। তাহলে আপনি আপনার বন্ধু বান্ধবদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন এবং আমাদের আর্টিকেল টি আপনি আগে পেতে আমাদের সাইটটি ফলো করে রাখুন। নিচে আপনি একটি সুন্দর মন্তব্য বা কমেন্ট করে জানাবেন।
নাহিদ ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url